মোঃ তাহেরুল ইসলাম, নীলফামারী: নীলফামারী ডোমারের মটুকপুর সরকারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির একজন ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

বাবা জীবিকার প্রয়োজনে ঢাকায় গিয়ে রিকশা চালান এবং মা একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আয়ার কাজ করেন। বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে দাদা-দাদির সাথে অবস্থান করেতে হয় তাকে।

গেল ৯ মে রাত আটটায় বাড়ি থেকে বের হওয়া পেছনের টিনের দরজা লাগানোর জন্য গেলে আগে থেকে অবস্থানরত হরেন্দ্র নাথ রায় তার মুখ চেপে ধরে পার্শ্ববর্তী বাঁশঝাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে এবং এই অভিযোগে ডোমার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়েছে।

মটুকপুর সরকারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, “আমাদের স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আমরা শিক্ষকরা এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই।”

বাবা-মা এবং চাচির দেয়া তথ্য মতে, প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে অবস্থার অবনতি হলে তাকে প্রথমে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহযোগিতা চওয়া হলে তারা বিষয়টি মীমাংসা করার পরামর্শ দেন বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার
অপরদিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য মিন্টু অভিযোগ নাকচ করে বলেন আমি এবং আমার চেয়ারম্যান এ ব্যাপারে মেডিকেলে ভর্তি এবং মামলা করার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেছি।

মেয়েটির বাবা বলেন, “অনেক স্বপ্ন ছিল মেয়েকে পড়াশোনা করিয়ে বড় করব কিন্তু এখন সে আর স্কুলে যেতে পারছেনা। আমরা হরেনের শাস্তি চাই।” এ বিষয়ে জানতে হরেন্দ্র নাথের বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী এবং দুই সন্তান ছাড়া পরিবারের আর কোনো সদস্যকে পাওয়া যায়নি।

হরেন্দ্রনাথের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তার স্ত্রী জানায় “স্বামী কোথায় আছে এবং কি অবস্থায় আছে এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি।” স্থানীয়রা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং তারা সবাই ন্যায় বিচার দাবি করছে।

মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ থানায় মামলা করার ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও আসামি ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে, ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরেই আমরা মামলা রেকর্ড করি এবং অভিযুক্তকে ধরার জন্য ধারাবাহিকভাবে চেষ্টা করি তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিযোগ গঠনের পরপরই আত্মগোপনে চলে যায়, ডিজিটালি এবং মেনুয়ালি দুইভাবেই তাকে ধরার চেষ্টা অব্যাহত আছে খুব শীঘ্রই আমরা তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করতে পারব।”

স্থানীয়রা বলছে, হেসে খেলে ঘুরে বেড়ানোর বয়সে এরকম একটি পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে ঘর থেকে বের হতে পারছেনা মেয়েটি অপরদিকে ক্ষুধা এবং দারিদ্রতার সাথে চরম সংগ্রাম করে বেঁচে থাকা অসহায় পরিবারটি ন্যায় বিচারের অপেক্ষায়।

তাদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হোক, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হোক, অপরাধী শাস্তি পাক এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীসহ সকলের।